বর্তমানে আরব উপদ্বীপে কোন নদী-নালা নেই। গাছপালার সংখ্যা খুবই কম। চাষাবাদের উপযোগী ভূমির পরিমাণ অতি নগণ্য। কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে আরব উপদ্বীপের পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং তা গাছপালা ও নদী-নালায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَعُودَ أَرْضُ الْعَرَبِ مُرُوجًا وَأَنْهَارًا
‘‘ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা যে পর্যন্ত না আরব উপদ্বীপ গাছপালা ও নদী-নালায় পূর্ণ হবে’’।[1]
হাদীছের প্রকাশ্য বর্ণনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে আরব দেশসমূহে কিয়ামতের পূর্বে পানির অভাব হবেনা। তাতে প্রচুর পরিমাণ নদী প্রবাহিত হবে। ফলে গাছ-পালা ও নানা উদ্ভিদ উৎপন্ন হবে এবং বন-জঙ্গলে ভরে যাবে।
হাদীসের আরেকটি বিস্ময়কর ভবিষ্যদ্বানী: কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে হিংস্র প্রাণী এবং জড় পদার্থ মানুষের সাথে কথা বলবে।
ইমাম আহমাদ (রঃ) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, ‘‘জনৈক রাখাল মাঠে ছাগল চরাচিছল। হঠাৎ একটি নেকড়ে বাঘ এসে একটি ছাগলের উপর আক্রমণ করলো। রাখাল বাঘের পিছনে ধাওয়া করে ছাগলটি ছিনিয়ে আনল। বাঘটি একটি টিলার উপর বসে বলতে লাগলোঃ তুমি কি আল্লাহকে ভয় করোনা? আল্লাহ আমাকে একটি রিজিক দিয়েছিলেন। আর তুমি তা ছিনিয়ে নিলে। রাখাল বললঃ কি আশ্চর্য্য ব্যাপার! মানুষের ন্যায় বাঘও আমার সাথে কথা বলছে। বাঘ বললোঃ আমি কি তোমাকে এর চেয়ে আশ্চর্য্যজনক খবর দিবোনা? মদ্বীনায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতীতে যা ঘটেছে এবং আগামীতে যা ঘটবে তা সম্পর্কে মানুষকে সংবাদ দিচ্ছে। রাখাল তার ছাগলের পাল নিয়ে মদ্বীনায় প্রবেশ করে ছাগলগুলো এক স্থানে রেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কাছে এসে ঘটনা খুলে বলল। এতক্ষণে নামাযের সময় হয়ে গেল। নামায শেষে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাখালকে বললেনঃ ‘‘তুমি সবার সামনে ঘটনা খুলে বল’’। সে ঘটনা বর্ণনা শেষ করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ রাখাল সত্য বলেছে। ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যতক্ষণ না হিংস্র প্রাণী মানুষের সাথে কথা বলবে। মানুষ তার হাতের লাঠির সাথে কথা বলবে, পায়ের জুতার সাথে কথা বলবে। এমনকি ঘরের স্ত্রী তার স্বামীর অনুপস্থিতে কি করছে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাকে বলে দিবে’’।(মুসনাদে আহমাদ, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সিলসিলায়ে সাহীহা হাদীছ নং- ১২২)
0 Comments